Ad Code

Ticker

6/recent/ticker-posts

মিসকল (ভাবির বোন যখন বউ), লেখাঃ Shamil Yasar , পর্বঃ ১৯

 

শশুর মশাই আমাকে দৌড়ে পালাতে দেখে বৃষ্টি ভাবিকে বলল বৃষ্টি তোর ফুপু শ্বাশুড়ী এমন দৌড়াচ্ছে কেন?
মাথায় কি কোন সমস্যা আছে নাকি?
ভাবি দ্রুত আমার কাছে চলে এসে ফিসফিস করে বলল এই অভ্র তোমাকে কেউ চিনতে পারেনি। এত ভয় পাচ্ছ কেন যেটা করতে এসেছ সেটা আগে করো । এত ভয় পাওয়ার কী আছে ধরা পড়লে দুই-একটা শুধু বকুনি খাবে। হবু জামাইকে তো আর ধরে বেঁধে মারতে পারবে না তাই না?
-ভাবি তুমি আমার শ্বশুরকে দেখছো আমাকে এমন ভাবে দেখছে যেন আমি সদ্য জেল থেকে বেরোনো আসামি। তার বাসায় এসেছি ডাকাতি করতে। আর এখন তো শশুর আপেলও পেয়ে গেছে আমার কপালে আজ শনি আছে এটা আমি 100% শিউর। পুলিশের চোখ ফাঁকি দেওয়া এতো সহজ নয়। আমি ভাইয়াকে কতবার করে বললাম এসব আপেল টাপেলের কোন দরকার নাই কিন্তু তোমার জামাই আমার কোন কথাই শুনলো না। এখন আমার কি হবে?
- আর কিছু হবে না আমি আছি না আরে ধরা পড়লে বলবা বউকে দেখতে আসছি কথা শেষ।
- এই ভাবি তুমি এখনি একটু আমার ওকে হলুদ লাগানোর ব্যবস্থা করে দাও না, প্লিজ..।
- আচ্ছা তা নাহয় দিচ্ছি এখন একটু স্বাভাবিকভাবে আমার সঙ্গে এসো। এতো কাপাকাপির কি আছে?
- ভাবি আমাকে নিয়ে ইসটেজের দিকে এগিয়ে যেতেই শশুর মশাই বললেন আপা কিছু কি হয়েছে আপনি আপনার আপেল না নিয়ে কোথায় পালাচ্ছিলেন?
- ভাবি হাসি হাসি মুখ করে বলল আসলে ফুপু বাথরুমে যাবে।
- ও আচ্ছা ! আচ্ছা একটা কথা বলবো আপা যদি কিছু মনে না করেন তাহলে বলি?
- আমি হ্যাঁসূচক ইশারা করলাম
- আপনি কি সব সময় আপেল সঙ্গে নিয়ে ঘুরেন?
- ভাবি বলল আসলে ফুপা আমার দেবরের খুব আপেল পছন্দ করে তো এই জন্য সবসময় সঙ্গে নিয়ে আসে।
- আমি ফিসফিস করে ভাবীকে বললাম কী বলতেছ এসব ভাবি
- শশুর মশাই তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে ভাবীর দিকে তাকিয়ে বললো মানে
- ভাবি নিজেকে স্বাভাবিক করে বলল ফুপির ছেলে খুব আপেল পছন্দ করে তো এজন্য ফুপি সবসময় আপেল সঙ্গে করে নিয়ে আসে।
- ওওওওও আচ্ছা ....
বৃষ্টি তোর ফুপু শ্বাশুড়ী মনে হয় ছেলেদের পোশাক পরতে খুব ভালবাসে তাই না?
- এই যা ধরা খেয়ে গেছি এখন আমারে কে বাঁচাবে। আমি দৌড়াতে নিলেই শশুর মশাই আমার হিজাব ধরে ফেলল
আর জাবেন কই হিজাবটা মাথা থেকে খুলে গেল। আমাকে দেখে শশুর আব্বা এমন ভাব করলো যেন এখনই আমারে খাইয়া ফেলবে
- আমি চোখ বন্ধ করে বললাম প্লিজ আঙ্কেল আমাকে মারবেন না আমার কোন দোষ নাই আপনার মেয়ে আমাকে চ্যালেঞ্জ করেছিল আমি নাকি আজকে এ বাড়িতে পা রাখতে পারব না। এই জন্যই শুধু আমি আসছি এ ছাড়া আমার কোন খারাপ মতলব ছিলো না। এরপর যা হলো তা আমার কল্পনার বাইরে ছিল।
- আমার বোরখা খুলে নেওয়া হলো। এরপর হিজাবটা সুন্দর করে আমার মাথায় পেঁচিয়ে আমাকে আমার বউয়ের পাশে বসে দাওয়া হল। কি এক বাজে পরিস্থিতি। বইসা বইসা আমার ইজ্জতের ফালুদা বানাই ফেলল। আর এই সব পরিকল্পনা আমার বউ এর।কতো বড় খাপ
- ঝর্নার কাজিনরা এসে আমার সাথে এমন ভাবে ছবি তুলতে লাগলো যেন জীবনে কোন হিজাব পড়া মানুষকে দেখেনি। উপস্থিত সবাই দাঁত কেলিয়ে হাসছে ইভেন আমার মা পর্যন্ত। এত অপমান কি সহ্য করা যায়।
- ঝর্না পাশ থেকে ফিসফিস করে বলল কি খুব সখ না বোরখা পড়ে বউয়ের হলুদে আশার? এখন কেমন লাগতেছে হিজাব পরে বউয়ের পাশে বসে থাকতে? সত্যি বলতে আপনাকে যা অস্থির লাগতাছে কি বলবো। একটা কাজ করতে পারতেন দাড়ি গোঁফ কেটে একদম ঠোটে লিপিস্টিক দিয়ে সুন্দর মেকআপ করে মেয়েদের একটা জামা পড়ে চলে আসতেন আপনাকে একদম সেই লাগতো বলেই হি হি করে হাসতে শুরু করল।
- তোমার কি আমার জন্য একটু কষ্ট হচ্ছে না আমার ইজ্জতের ফালুদা হয়ে যাচ্ছে সেদিকে কি তোমার নজর আছে? বেহায়ার মত হি হি করে হাসছ!
- বারে আপনি বেহায়ার মত বোরখা পরে বউয়ের হলুদ অনুষ্ঠানে আসতে পারেন আর আমি হাসলে দোষ? এই এদিকে একটু তাকান না আপনার সঙ্গে একটা সেলফি উঠাই।
- দেখো ফাইজলামি কম করে করো আমি আমার চ্যালেঞ্জ সম্পূর্ণ করছি এখন তুমি তোমারটা কর জলদি একটা কিস দাও
- আপনি কি পাগল হয়ে গেছেন এখানে সবাই দেখছে।
- কথা এটাই ছিল আমি যদি আসি তাহলে তুমি সবার সামনে আমাকে কিস করবা এখন তাড়াতাড়ি জলদি কর।
- না আমি এসব পারব না আমার লজ্জা করে।
- ওমা এটা কেমন কথা চ্যালেঞ্জ দেওয়ার সময় কি এটা মনে ছিল না তোমার? ভালোই ভালোই বলতাছি তাড়াতাড়ি দিয়ে দাও তা না হলে আমি দিবো। আর তুমি ভালো করেই জানো আমার আবার লজ্জা শরম নাই।
- ঝর্না মাকে ডাক দিয়ে কান্না কান্না ভাব করে বলল মা দেখো তোমার ছেলে বলতেছে আমি এখন সবার সামনে যদি উনাকে চুমু না দি তাহলে ও আমাকে বিয়ে করবে না।
- মা ঝর্নার কথা শুনে আমার দিকে এগিয়ে এসে বলল একেতো মান-সম্মানের মাথা খেয়ে বোরখা পড়ে নিজের বউয়ের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে চলে এসেছিস এরপর আবার উল্টোপাল্টা কথাবার্তা বলতেছিস তোর সাহস তো কম না?
- মা বিশ্বাস করো আমি ওরে এরকম কিছুই বলি নাই।ও এক নম্বরের মিথ্যাবাদী ও নিজেই আমাকে চুমু দেওয়ার লোভ দেখিয়ে এখানে নিয়ে আসতে। এখন নিজেই নিরীহ সাজতিছে বিশ্বাস কর মা
- খবরদার আমার মেয়ের উপর উল্টাপাল্টা অপবাদ দিবি না নিজেই এক নম্বরের মিথ্যাবাদী। মেয়ে মানুষের মতো হিজাব পড়ে বইসা আছিস তোর লজ্জা করে না? তুই আমাদের মান-সম্মান আর কিছুই রাখলি না।
- আমার কি দোষ? দেখো না হাত বেঁধে রাখছে তোমার বৌমাকে বলতেছি যে খুইলা দিতে কিন্তু সে আরো মজা নিচ্ছে।
- মা কানের কাছে এসে ফিসফিস করে বলল নিজের বউকে চুমু খাবি এতে ওর অনুমতি নেওয়ার কি আছে? ও যদি চুমু দিতে না চায় তাহলে তুই দিবি। কথা বলতে বলতে ফট করে চুমু দিবি আশেপাশের মানুষ বুঝতে পারব না।
- মা গালটা একটু আগিয়ে দাও না।
- মা ভেংচি কেটে বলল হ্যাঁ তোর বউকে তুই চুমু খাবি আর আমি তার গাল এগিয়ে দেবো তাই না? অসভ্য ছেলে
- আরে ওই ভুটকি মেয়েকে কে চুমু খাবে? আমি তো তোমার গালটা এগিয়ে দিতে বলেছি। মা আমার হাতের বাধন খুলে দিতেই আমি হিজাবটা খুলে মার কপালে একটা চুমু দিয়ে ঝর্নার কানের কাছে মুখ নিয়ে এসে ফিস ফিস করে বললাম। আজ চুমু দিলে না তো মনে থাকবে। জীবনে তোমাকে চুমু দিতে বলবো না মুটকি। প্রয়োজন হলে অন্য মেয়েদের চুমু দিবো তবু তোমাকে না ।
মুহূর্তেই ঝর্নার মুখের রং উড়ে গেল। মা সামনে দাঁড়িয়ে আছে সে কিছু বলতে পারলো না। শুধু ফ্যালফ্যাল করে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল।
-আমি হুট করে একটা চুমু খেয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে আসতে নিলে শশুর মশাই আমার সামনে এসে দাড়ালেন। গম্ভীর কণ্ঠে বললেন অভ্রনীল একটু আমার সঙ্গে এসো।
- আমি ভয়ে ভয়ে তার সঙ্গে গেলাম। কি যে বলবে আল্লাহ ভালো জানে কোমরে দেখতেছি আবার পিস্তল । তার মেয়ের গালে চুমু দেওয়া অপরাধে আমার রিমান্ডে নেয় নাকি?
- ছাঁদে যাওয়ার পর শশুর মশাই আমার একটা হাত শক্ত করে ধরলেন। আমি তো ভয়ে শেষ এই বুঝি আমাকে ছাদ থেকে ফেলে দেয় আমি এসব ভাবছিলাম হুট করে শ্বশুর মশাই আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন। মেয়েটা আমার কখনোই মায়ের ভালোবাসা পায় নি। আমিও চাকরি নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম ওকে ঠিকমতো সময় দিতে পারিনি। না পেরেছি ভালবাসতে। আমার মেয়েটা আজীবন শুধু কষ্টই পেয়ে গেছে। তুমি তো ওকে ভালোবাসো তাই না? মেয়েটাও তোমাকে পাগলের মত ভালবাসে। আমি জানি ও তোমার কাছে খুব সুখে থাকবে। তবু তুমি আমাকে কথা দাও তুমি ওকে আর কখনও কষ্ট পেতে দেবে না।
সবসময় ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখবে।
শেষের দিকে আমার শশুর মশায়ের কথাগুলো কেমন জড়িয়ে আসছিল।
আমি বললাম চিন্তা করবেন না আঙ্কেল আমি ওকে কখনোই কষ্ট দিব না।
রাতে
- ঝর্না তুমি নাকি এখনো ডিনার করোনি?
- হ্যাঁ
- কেন ঘড়ি দেখেছো তুমি কটা বাজে?
- আমি নাকি মুটকি তাই ডায়েট করতেছি।
- কার এত বড় সাহস যে আমার সুন্দরী বউ টা কে মুটকি বলেছে?
- ঢং নিজে বলে এখন ঢং করতেছে।
ফাজিল লোক একটা।
- আরে আমি তো মজা করে বলছি।
- আচ্ছা আপনি কি সত্যিই আমাকে আর কিস করবেন না?
- আরে পাগলি মেয়ে তোমার কি মনে হয় আমি তোমাকে কিস না করে থাকতে পারবো? আর তাহলে কি তখন চুমু দিতাম
আজ আমার আর ঝর্ণার বিয়ে।
প্রায় 4 ঘন্টা হল ঝর্নাদের বাসা তে এসেছি অথচ এখন পর্যন্ত আমাদের বিয়েটা পড়ানো হয় নাই ‌। এসেছি তিনটায় এখন বাজতে চলল সন্ধ্যা সাতটা না আছে বউয়ের খবর না আছে কাজীর। হুদাই হুদাই আমারে শুধু বসায় রাখছে।
কিছুক্ষণ পর পর শ্বশুর মশাই এসে দাঁত বের করে বলতেছে বাবা আর একটু ধৈর্য ধরো। এদিকে ধৈর্য ধরতে ধরতে যে আমার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে যাচ্ছে সেটা কেউ দেখছে না।
বিয়েতে যতো পোলাপান আসছে আমার পাশে বসে বসে সেলফি উঠাচ্ছে । আজকে আমার ছবি দিয়া নিশ্চয় ফেসবুক ভরিয়ে ফেলবে। পোলাপানের কাম নাই বিয়ে বাড়ি আসছিস খাওয়া-দাওয়া করবি চইলা যাবি এত ছবি উঠানোর কি দরকার আর ছবিগুলো ফেসবুকে দেওয়ার বা কি দরকার? আর মেয়েগুলা এমনভাবে ছবি উঠাছে কি আর বলবো মুখ বাকা তেরা আরো কত স্টাইল।
বাবা পাশে এসে বসতে আমি বাবাকে বললাম, বাবা আর কতক্ষণ? আমার বউ এমনিতেই দেখতে সুন্দর এত সাজগোজের তো প্রয়োজন নাই।
- মেয়ে মানুষ বুঝিসনা আর বিয়ে তো একবারই হয় একটু সাজুক না সমস্যা কি?
- সাজকু ভালো কথা তো সাজগোজ করতে কি চার ঘন্টা লাগে? আর কতক্ষণ বসে থাকবো । বসে থাকতে থাকতে আমার কোমর ব্যাথা হয়ে গেছে ক্ষুধায় পেট চোঁ চোঁ করতাছে। আমার মেজাজ কিন্তু ভীষণ খারাপ হয়ে যাচ্ছে বাবা তুমি প্লিজ পাঁচ মিনিটের মধ্যে বউ আর কাজীকে আসতে বলো। না হলে আমি কিন্তু বিয়া না করেই চলে যামু বলে দিলাম।
এটা কি ফাজলামি পাইছ নাকি আসছি সেই কখনো সে তখন থেকে বইসা রাখছে । বিয়েটা হোক তারপর বইসা রাখুক সমস্যা নাই?
- ভাবি আমাকে রাগারাগি করতে দেখে এগিয়ে এলেন। কি হয়েছে অভ্র?
- ভাবি তুমি ঝর্না কে তাড়াতাড়ি আসতে বল আমার কিন্তু মেজাজ ভীষণ খারাপ হচ্ছে। পাঁচ মিনিটের মধ্যে না এলে এখানে অনেক সুন্দরী মেয়ে আছে একটা রে ধইরা বিয়ে করে নিয়ে যাব বাসায় আমি এতক্ষণ ধরে বসে থাকতে পারবো না। তোমরা কেন যে বাসায় মারে রেখে আসছো। মা থাকলে আমি এতক্ষণ বউ নিয়া বাসর ঘরে থাকতাম।
- এত তাড়াতাড়ি কেন তারা তোমার বাসর ঘরে ঢুকবার শখ গো? একটু সবুর করো সবার কা ফল মিঠা হোতা হে।
- ধুর তোমরা সবাই আমার সঙ্গে ফাজলামি করতেছ আমি বিয়ে করবো না যাও। বলেই আমি উঠতে নিলেই দেখলাম সদর দরজা দিয়ে ঝর্না প্রবেশ করছে। আমার বউটা এমনিতেই যে সুন্দর ওরে আজ লাল শাড়িতে ভয়ঙ্কর এর উপর ভয়ঙ্কর সুন্দর লাগছে। আমাকে হাঁ করে তাকিয়ে থাকতে দেখে বাবা বলল মুখটা বন্ধ কর মশা ঢুকবে।
- ঝর্না আমার পাশে বসতেই আমি বললাম এই এত সময় লাগে সাজতে। আমি কতক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছি তোমার জন্য।
- আমার কি দোষ মা তো ইচ্ছে করে দেরি করল।
- আমি অবাক হয়ে বললাম মা আসছে? এই না আমাকে বললো আসবে না?
- আমি জোর করে নিয়ে এলাম।
- বিয়ে পড়ানোর সময় কাজী আমাকে কবুল বলার জন্য বললার পূর্বেই আমি তিনবার কবুল বলে ফেললাম।
- সবাই হি হি করে হাসতে হাসতে বলল বরের আর তর সইছে না। বলেনতো খুদায় আমার পেট চোঁ চোঁ করতাছে। আমরা চার ঘণ্টা ধরে বসায় রাখছে এক গ্লাস জুস পর্যন্ত দেয় নাই। গেটের সামনে হুদাই হুদাই একটা মিষ্টি খাওয়াইয়া আমার পকেট খালি করে নিয়েছে বদমাশ মেয়ে গুলা। তখন কি সুন্দর দুলাভাই দুলাভাই করছিল টাকা নেওয়া শেষ কে দুলাভাই কিসের দুলাভাই চেনেই না আমারে।
- বিয়ে করা যে এত ভেজাল তা আগে জানতাম না। মন মেজাজ খারাপ থাকলেও দুই পাটির দাঁত বের করে হি হি করে হাসতে হাসতে কথা বলতে হয় ছবি তুলতে হয়। এরপর আবার খাওয়ায় দিতে হয় শুধু বউকে দিলে হয় না সঙ্গে শালী দেরও দিতে হয়। আর বউ আমার মজা নাই বসে বসে তার যেন কোনো ফিলিংস ই নাই। আমি যে অন্য মেয়েরে খাওয়ায় দিচ্ছি কিসের কি সে জ্বলবে তা না সে হিহিহি করে হাসে।
- বিয়ের সব ফর্মালিটি পূরণ হওয়ার পর দেখা গেল আমার জুতা নাই। আমার জুতা চুরি করছে আমার আদরের সুন্দরী শালি গন। তাদের নাকি 10000 টাকা চাই। 10 হাজার টাকা না দিলে জুতা দিবেনা। কিরে ভাই 10 হাজার টাকা কি গাছের গোটা যে চাইলেই পাওয়া যায়?
জুতা দেখার দায়িত্ব দিয়েছিলাম আমার ছোট ভাই জাহিন কে। ওরে বললাম এই আমার জুতা কই? তোকে না বলছিলাম জুতা সবসময় নিজের কাছে রাখবি তাহলে ওদের হাতে গেল কিভাবে?
- জাহিন মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলল আসলে হয়েছে কি ভাইয়া। ওই নীল শাড়ি পরা মেয়েটা আছে না, দেখতে কিন্তু জোশ। আমিতো দেইখাই ক্রাশ খেয়ে গেছি। মেয়েটা এত করে রিকোয়েস্ট করছিল জুতাটা দেওয়ার জন্য এরপর আবার একটা ফ্লাইং কিস ছুঁড়ে দিছে আমাকে বলে বুকে হাত দিল। এখন তুমি বল এরকম সুন্দরী একটা মেয়ে তোমাকে যদি ফ্লাইং কিস ছুঁড়ে দিত আর জুতার জন্য বারবার রিকোয়েস্ট করত তাহলে তুমি কি তার রিকোয়েস্ট ফেলতে পারতা?
-শালা তুই এক ময়দা সুন্দরীর জন্য আমার এত বড় ক্ষতি করতে পারলি?
- ভাইয়া তুমি ওকে এভাবে ইনসাল্ট করতে পারো না। সি ইজ মাই ক্রাশ সো প্লিজ রিসপেক্ট হার।সি ইজ নট ময়দা সুন্দরী।
- যা এখন ওর পা ধুয়ে পানি খা ।
দূর হ আমার চোখের সামনে থেকে
- বিদায়ের সময় ঝর্না ভীষণ কান্না করছিল। মেয়েদের জীবনে কেমন বৈচিত্র্যময়‌। মেয়েদের আপন ঠিকানা বলতে কিছুই নেই। ছোট থেকে বড় হয় বাবা-মার কাছে। মেয়ে বড় হয়ে গেলে তাদেরকে বিয়ে দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয় সম্পূর্ণ অচেনা-অজানা স্বামী নামের একজন মানুষের কাছে। সেই মেয়েটা কে আবার আপন করে নিতে হয় সম্পূর্ণ অচেনা অজানা তার শশুর বাড়ির লোকজনকে।
আমার শ্বশুর মাকে বলল বেয়ান আমার মেয়েটা কখনো মায়ের আদর পায় নাই। আমার মেয়েটাকে নিজের মেয়ের মত দেখবেন একটু। ওকে আমি কখনোই কাজকর্ম করতে দিই নাই আমি জানি আপনি যদি ওকে ভালোবাসা দেয়ে শিখান তাহলে ও খুব তাড়াতাড়ি শিখে যাবে। আমার মেয়েটা কখনো ভালোবাসা পায় নি আপনি ওকে একটু ভালোবাসা দিয়ে আগলিয়ে রাখবেন। আর ও মাঝে মাঝে একটু পাগলামি করে যিটা নিয়ে আমার সবচেয়ে বেশি ভয়।
মা ঝর্না কে বুকে জড়িয়ে বলল। আপনি কোন চিন্তা করবেন না ভাই। এই পাগলি মেয়েটা আজ থেকে আমার মেয়ে। ওকে এত আদর করব দেখবেন আপনার মেয়ে আপনাকে ভুলে যাবে।আর ওকে কাজ করতে হবে না আমার বাড়িতে অনেক কাজের লোক রয়েছে। মা এবার আমার দিকে তাকিয়ে বলল এই শোন আমার মেয়েকে যদি কখনো কষ্ট দিয়েছিস তাহলে তোর ভাত বন্ধ।
এটা কোন কথা মা কিসের কি তুমি একটু হিটলার শাশুড়ি হবে তা না তুমি নিজের ছেলেকে সাপোর্ট না দিয়ে সব সময় ছেলের বউকে সাপোর্ট দাও এটা কোন কথা? তোমাকে কত করে বলি স্টার জলসার সিরিয়াল গুলো একটু দেখো। দেখে একটু শিক্ষা নাও কিভাবে বউদের নিজের কন্ট্রোলে রাখতে হয়। কিন্তু তুমি তো আমার কথাই শোনো না।
- ওইসব ফালতু সিরিয়াল আমার দেখা লাগবেনা। আর আমি কি আমার বাসায় বউ নিয়ে যাচ্ছি নাকি যে তাদের কন্ট্রোল করতে হবে আমি আমার বাসায় আমার মেয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
- ভাবীরা ঠেলেঠুলে আমাকে বাসর ঘরে ঢুকিয়ে দিল। বেশ সুন্দর করে সাজানো হয়েছে আমার ঘরটা। তার চেয়ে সুন্দর করে সাজানো হয়েছে আমার বউটা কে। আমি ঝর্নার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম।
-ঝর্না ভিত চোখে এদিক ওদিক তাকিয়ে বলল আমাদের সাথে তো এখনো কোনো অঘটন ঘটল না? সবাইকি ভদ্র হয়ে গেছে?
- আরে না আমি মাফ চাইছি ভাবির কাছে । ভাবি বলছে সে কিছু করবেনা ‌। সো ওসব নিয়ে চিন্তা করো না। এখন শুধু চিন্তা করবে তুমি আমাকে নিয়ে। আর একবার যখন বাসর ঘরে ঢুকেছি । আল্লাহ ছাড়া কারো ক্ষমতা নেই আমাদের বের করার বলে আমি ওর পাশে বসতে নিলে রুমের লাইট সম্পূর্ণ অফ হয়ে গেল। এমনটা তো হওয়ার কথা না? কারণ কারেন্ট চলে গেল তো আইপিএস আছে।
হঠাৎ আমার বেডের নিচে জোরে লাউডস্পিকার বেজে উঠলো একটি গান।
তুমি দিওনা গো বাসর ঘরের,
বাতি নিভাইয়া,
আমি বন্ধ ঘরে অন্ধকারে,
যাব মরিয়া।।
তুমি ভয় কেন পাও প্রাণ সজনী
আমায় দেখিয়া।
তোমায় প্রেম সোহাগে রাখব আমার
বুকে জড়াইয়া।
তুমি দিওনা গো বাসর ঘরের
বাতি নিভাইয়া।
আমি বন্ধ ঘরে অন্ধকারে
যাব মরিয়া।
তুমি ভয় কেন পাও প্রাণ সজনী
আমায় দেখিয়া।
তোমায় প্রেম সোহাগে রাখব আমার
বুকে জড়াইয়া।
ও আঁচল ধরে টান দিওনা
লাজে মরে যাই।
প্রথম রাতে আমি তোমার
কাছে ক্ষমা চাই।
ও সুখের পরশ দেব তোমায়
থেকো না দূরে।
শান্তি খুঁজে পাবে আমার
প্রেমের আদরে।
আমি চাইনা তোমার প্রেমের আদর দাওনা ছাড়িয়া
সবকিছু জোর করে
নিও না কাড়িয়া
নিও না কাড়িয়া
ঘরের বাতি নিভাইয়া।
তুমি ভয় কেন পাও প্রাণ সজনী আমায় দেখিয়া।
তোমায় প্রেম সোহাগে রাখব আমার বুকে জড়াইয়া....
- গান শেষ হতেই শুভ ভাই এর কন্ঠ ভেসে এলো লাউডস্পিকার থেকে। বউকে আদর করবি না যত ইচ্ছা কর কোনো সমস্যা নেই। রুমে সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছি আমরাও দেখি তোরা কেমন রোমান্স করতে পারিস। আবার ভাবিস না যেন লাইট অফ করে দিলে কিছু দেখতে পাবো না ক্যামেরা কিন্তু অন্ধকারের একদম ফক ফকা ভিডিও করতে পারে। কি কেমন লাগলো আমাদের সারপ্রাইজ?
হা হা হা মনে আছে আমার বাসর রাতে কি করেছিলি?
চলবে....
বিশেষ দ্রষ্টব্য ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন। অবশ্যই জানাবেন আগামী পর্বে শেষ করে দিব ইনশাল্লাহ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ad Code