Ad Code

Ticker

6/recent/ticker-posts

মিসকল (ভাবির বোন যখন বউ), লেখাঃ Shamil Yasar , পর্বঃ 20 শেষ

 

ভাইয়া এটা তুমি কাজ ঠিক করছো? আমি কি তোমার রুমে সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছিলাম?
- তুই সিসি ক্যামেরা লাগাস নাই তো কি হইছে আমাদের বেডের নিচে শুয়ে-শুয়ে তো সবকিছু কানপেতে শুনছিলি। আমি তো আর নির্লজ্জের মত তোর বেডের নিচে লুকিয়ে তোদের রোমান্স দেখতে পারিনা? তাই ভাবলাম সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে তোদের বাসররাত লাইভ টেলিকাস্ট করব।
- ভাইয়া আমি ইচ্ছে করে তোমার বেডের নিয়েছে লুকিয়েছিলাম নাকি? বাবা বলেছিল এইজন্য আমি লুকিয়ে ছিলাম। তুমি আমার বড় ভাই হয়ে এটা করতে পারল?
- কেন রে দুষ্টুমি কি তুই শুধু একাই করতে পারিস আমি পারিনা বুঝি? তুইতো আমার বউকে ব্যাঙ দেখিয়ে অজ্ঞান করে ফেলেছিলে। আমি তো তাও মায়া দয়া করে তোর বউকে ছাড় দিলাম।
- এটা কোন কথা ভাইয়া আমি তো ভাবির কাছে মাফ চাইলাম।
- তোর ভাবীর কাছে মাফ চেয়ে লাভ নাই তো তোর ভাবি মাপ করলেও আমি তোরে মাফ করি নাই।
- তুমি তোমার ছোট ভাইয়ের সঙ্গে এটা করতে পারলা?
- তুই আমার বাসর রাতে খুব মজা নিছু এবার আমার নেওয়ার পালা।
- দাঁড়াও আমি এখনই সব সিসিক্যামেরা ভাঙ্গে ফেলেছি এরপর তুমি কিভাবে দেখো সেটাই দেখি।
- হাহাহা অভ্র তুই চলিস ডালে ডালে আমি চলি পাতায় পাতায় ‌। সিসি ক্যামেরা ভেঙে কোনই লাভ নেই । গোপন ক্যামেরা ফিট করা আছে বুঝতে পারবে না কোথায় ক্যামেরা লাগিয়েছি।
- তার মানে এই চার ঘন্টা ধরে তোমরা আমাকে ঝর্নাদের বাসায় বসিয়ে রেখে আমার রুমে এসব করেছ? আল্লাহ পাপ দিবে ভাইয়া । তোমাদের একজন কেউ ছাড়বে না। কঠিন পাপ দিবে। আমি কান্না কান্না ভাব করে বললাম আমি দোয়া করছি তুমি জীবনে আর তোমার ওয়াইফাই কানেক্ট করতে পারবা না।
- আমার ওয়াইফাই নিয়ে তোর টেনশন করতে হবে না আমার টা কানেক্ট করা আছে ডিসকানেক্ট হবার কোন চান্স নাই। তুই তোর টা নিয়ে ভাব । আজ আমি কিছুতেই তোর ওয়াইফাই কানেক্ট করতে দেবো না। আর তুই যদি সবার সামনে কানেক্ট করতে চাস তাহলে সেটা তোর ব্যাপার বলেই একটা শয়তানি হাসি দিল।
- ছিঃ ভাইয়া তুমি আমার মত একটা নিষ্পাপ নিরীহ ছেলের সঙ্গে এটা করতে পারো না।
- তুই যে কেমন নিষ্পাপ নিরীহ ছেলে সেটা সবাই জানে।
- ঝর্না আমার দিকে ছলছল নয়নে তাকিয়ে বলল এখন কি হবে? সব দোষ আপনার কেন যে আপনি অন্যের বাসর ঘরে এসব উল্টাপাল্টা কাজ করছেন আগেন।
-আমি অনেকক্ষণ ভেবে চিন্তে যখন কোন উপায়ন্তর খুঁজে পেলাম না। ঝর্নার দিকে তাকিয়ে অসহায় কন্ঠে বললাম ঝর্না আমি কি তোমার হাত ধরতে পারি?
- ঝর্না আমার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে বলল আপনি এত ভদ্র হলেন কবে? নিজের বউয়ের হাত ধরবে এটা আবার অনুমতি নেওয়ার কি আছে।
- আমি ঝর্ণার হাত ধরে বললাম আমি সারাজীবন ভদ্র ছিলাম শুধু তোমার চোখেই পড়েনি।
- ঝর্না ভেংচি কেটে বলল কচু ভদ্র
- আমি ঝর্ণার চোখে চোখ রেখে বললাম তোমাকে যে আজ ভয়ঙ্কর সুন্দর দেখাচ্ছে সেটা কি তুমি জানো? তুমি তো এমনিতেই সুন্দর এরপর আবার এত সাজার কে প্রয়োজন ছিল? আমার তো এখন তোমাকে খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে।
- ঝর্না লজ্জায় লাল হয়ে বলল যা অসভ্য দের মত কথা বলবেন না তো।
- আমি দাঁত কেলিয়ে বললাম শুধু রুমে সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে এই জন্য আজ তুমি বেঁচে গেলে। তা না হলে আজ তোমার অবস্থা খারাপ করে দিতাম।
- ইস বাজে কথা বলবেন না তো। আমার লজ্জা লাগে।
- ওরে আমার লজ্জাবতিরে বলে আমি ঝর্না কে কিস করতে নিলে ঝর্না বলল কি করছেন কি সবাই দেখছে তো।
- এদের জন্য শালা একটু শান্তি মত কিস ও করতে পারলাম না। আইডিয়া
আমি ঝর্ণার কানের কাছে ফিসফিস করে বললাম। ঝর্না তুমি শুয়ে পড়ো
- কেন?
- আরে যেটা বললাম সেটা করো না
- ঝর্না শুয়ে পড়তেই আমিও কাঁথা নিয়ে একদম আমাদের দুজনের চোখ মুখ ঢেকে শুয়ে পড়লাম। ঝর্নার দিকে তাকিয়ে বললাম এখন কে বুঝবে কাঁথার নিচে কি করছি আমরা? চলনা রোমান্স করা যাক।
- এই একদম কাছে আসবে না।
- ধুর ভাল্লাগে না বিয়ে করে যদি বউয়ের সঙ্গে রোমান্স করতে পারি তাহলে বিয়ে করে কি লাভ?
- ওমা তাই আমার বরটার বুঝি আর তর সইছে না বলে ঝর্না আলতো করে আমার গালে চুমু দিল
- কিছুক্ষণ পর ঝর্ণা বললো ইস আমার খুব গরম লাগছে এই কাঁথার মধ্যে আমি আর থাকতে পারব না।
- গরম লাগলে কাপড় চোপড় সব খুলে ফেলো তাহলে আর গরম লাগবে না।
- ঝর্না আমার বুকে দুইটা কিল মেরে বললো অসভ্য লোক একটা। বাসর ঘরেও উনার অসভ্যতামি করতে হবে
- যা বাবা এখানে অসভ্যতামি কি করলাম? গরম লাগছে এজন্যই তো আমি কাপড় খুলতে বললাম। তুমি তো আমার বউ তাই না আমার সামনে....
- আপনি চুপ করবেন। এমনিতেই তো সবাই আমাদের দেখছে ইস কি লজ্জা ‌
- বাসর রাতে তো বারোটা বেজে গেছে এখন কি আর করার বলো। এখন চলো আমরা দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে আজকের রাতটা পার করে দিই। বাসর না হয় তোমাদের বাসায় গিয়ে করব।
- কথা মন্দ বলেননি । কিন্তু এই রাত নিয়ে আমার কতো স্বপ্ন ছিল
- আমরা তো দুজন একসঙ্গে থাকতে পারছি । বাবা তো ভাইয়ার বাসর রাতে ওদের দুজনকে একসাথে থাকতে দেয়নি।এটার জন্যই আমাদের আল্লাহ কাছে শুকরিয়া আদায় করা উচিত বলে আমি ঝর্ণাকে জড়িয়ে ধরতে যাব হঠাৎ করে কানে বাবার কর্কশ কন্ঠ ভেসে এলো।
- এই তোরা কাঁথা মুড়ি দিয়ে কি খিচুড়ি পাচ্ছিস হুম?
- আমি আর ঝর্ণা হুরমুড়িয়ে উঠে বসলাম। বাবাকে আমার রুমে দেখে আমাদের দুজনের চোখ ছানাবড়া। বাবাকে দেখলাম বাথরুমের বদনা হাতে আমাদের বেডের পাশে দাঁড়িয়ে আছে।
- আমি উত্তেজিত কন্ঠে বললাম বাবা তুমি এই রুমে কি করো? আর দরজাতো লাগানো তাহলে তুমি রুমে ঢুকলে কিভাবে?
- আমি তো রুমে ছিলাম বাবা বলল।
- বাবা তুমি তোমার ছেলের বাসর ঘরে লুকিয়ে লুকিয়ে ছেলে আর ছেলের বউয়ের রোমান্স দেখছিলে এটা কি ঠিক?
- বাবা কপট রাগ দেখিয়ে বলল আমি কোথায় তোদের রোমান্স দেখলাম? আমি তো আমার পেট ক্লিয়ার করতে আসছিলাম তোর রুমে?
- মানে ?
- এত প্রশ্ন করা বাদ দিয়ে বাথরুমে গিয়ে দেখ তো কমোডের ফ্ল্যাশ টা কাজ করছে না।
- মানে কি! বাড়িতে এতগুলা বাথরুম থাকতে তুমি আমার বাথরুমে এসেছিলে টয়লেট সারতে?
- বাবা ইনোসেন্ট বাচ্চাদের মত বলল হ্যাঁ কি করব? সবগুলো বন্ধ ছিল আর আমার খুব চাপ দিয়েছিল আটকিয়ে রাখতে পারছিলাম না। বাড়িসুদ্ধ মেহমান এর মধ্যে যদি কাপড় নষ্ট করে ফেলতাম তখন তো আর মান-সম্মান থাকতো না তাই তোর রুমে ফাঁকা পেয়েছি চলে এসেছি। এখন যা গিয়ে একটু ফ্ল্যাশ টা দেখ।
- ছিঃ বাবা তুমি টয়লেটের বদনা নিয়ে আমার রুমে ঢুকছো?
- এমনভাবে ছিঃ বলছিস যেন আমি পুরো বগুড়ার ম্যানহোলের গু তোর রুমে নিয়ে আসছি? এখন এত কথা না বলে যেটা বললাম সেটা একটু কর।
- ঝর্না আমাকে একটা চিমটি কেটে বলল এই যান না বাবা যেটা বলে সেটা করেন।
- আমি অসহায়ের মত বিছানা থেকে নেমে বাথরুমের দিকে যেতে নিলয় বাবা আমার হাতে বদনা ধরিয়ে দিয়ে বলল এটাও নিয়ে যা সাথে। কি আর করার বদনা হাতে নিয়ে বাথরুমে ঢুকলাম।
সঙ্গে সঙ্গে খুট করে একটা শব্দ হলো
- আমি কমোডের কাছে যেতেই দেখলাম কমোডের উপর একটা চিঠি রাখা। আমি চিঠিটা নিয়ে খুলে পড়তে শুরু করলাম।
বাবা লিখেছেন অভ্র মনে কিছু নিস না। ফ্লাশ একদম ঠিক আছে। এটা তোকে শুধুমাত্র বাথরুমে ঢুকানোর জন্যে বলেছিলাম।
তোর খুব সখ না বাসর রাতে বউ নিয়ে রোমান্স করার? তুই এটা ভাবলি কিভাবে আমি তোকে রোমান্স করতে দেবো? মনে আছে তোর দাদু আমাকে বাসর রাতে আমার বউয়ের কাছ থেকে আলাদা রেখেছিল। তোর দাদু আমাকে আমার সুন্দরী বউ টাকে দেখতে পর্যন্ত দেয়নি। পরের দিন আমি চলে গিয়েছিলাম চাকরিতে। বউকে কাছে পেয়ে ছিলাম ছয় মাস পর। আর সেই জায়গায় তুই ভাবি কিভাবে আমি তোকে বাসর রাতে তোর বউয়ের কাছে যেতে দেবো? আমি বেঁচে থাকতে এই বংশের কোন ছেলেই বাসর রাতে তার বউয়ের কাছে থাকতে পারবে না।? আমার এখনো মনে আছে সেই রাতে আমি একটু ঘুমাতে পারিনি। আমার সুন্দরী বউ টার মুখ দেখার জন্য শুধু ছটফট করেছি। আর তোর দাদু মুখ টিপে শুধু হেসেছেন। তিনি আমাকে ছটফট করতে দেখে খুব মজা পাচ্ছিলেন সেদিন। তো অভ্র বাবা তুই এখন বউকে নিয়ে বাসর করার চিন্তা ভাবনা ছেড়ে দিয়ে। কমোডে বসে তোর পেট ক্লিয়ার কর। আমি তোর বউকে নিয়ে গেলাম। শুভ বাথরুম বাসর রাত
- আমি চিঠিটা পড়া শেষ করে দ্রুত দরজার দিকে এগিয়ে গেলাম। দরজা খোলার চেষ্টা করলাম কিন্তু খুলনা। কয়েকবার ধাক্কা দিয়ে ঝর্না কে ডাকলাম ঝর্নার কোন উত্তর এলো না কিন্তু বাবা বললেন
- অভ্র সোনা দরজায় ধাক্কা দিয়ে লাভ হবে না। "আর এফ এল কসমিক ডোর" লাগিয়েছি বহুৎ মজবুত এত সহজে ভাঙবে না। চেকে যাবে বেঁকে যাবে তবু ভাঙবে না। তাই এত ধাক্কাধাক্কি করে লাভ নেই চুপ করে যেয়ে কমোডের উপর বসে পেট ক্লিয়ার কর।
- আমি চিৎকার করে বললাম বাবা এটা কিন্তু ঠিক না তোমার বাবা হিটলার ছিল এজন্য তোমার বাসরের বারোটা বাজিয়েছে তাই বলে তুমি আমাদের বাসরের বারোটা বাজাবে?
- হ্যাঁ একশোবার বাজাবো কারোর বাসরে কথা শুনলেই আমার মাথা গরম হয়ে যায়। আর তখন আমার মধ্যেও আমার সেই হিটলার বাবা জেগে ওঠে। কষ্ট পেয়ো না বাবা যা করার তোমার শ্বশুর বাড়ি গিয়ে করো কেমন এক রাতেরি তো বেপার। এখন কমোডের উপর বসে পেট খালি করার যাও। টাটা শুভ রাত্রি
- আমি আরো জোড়ে চিৎকার করে বললাম ও আম্মা দেখতো তোমার স্বামী আমার বউকে নিয়ে যাচ্ছে গোঁ। আম্মা আমি কিন্তু বদনার জলে ডুবে মরব প্লিজ দরজা খুলে দাও। আমার বউ কে আমার কাছে থেকে নিয়ে গেল গোঁ কে আছ আমাকে সাহায্য কর।
- চিৎকার করে লাভ নেই বাবা তোমার মা এখানে আসবে না।
- প্লিজ বাবা দরজাটা খুলে দাও বাসর না হয় নাইবা করতে দিলে রুমে তো থাকতে দিবে? এখানে আমি ঘুমাবো কিভাবে?
- কেন কমোডের উপর বইসা চোখ বন্ধ করলেই দেখবি চোখে ঘুম চলে আসবে। আমি কতো দিন ঐ ভাবে ঘুমিয়েছি। আর যদি শুইতে ইচ্ছে করে তাহলে তোর বাথরুম তো বড় আছে শুয়ে পড়বে মেঝেতে।
- এরপর আমি কত ডাকলাম কিন্তু কেউ আর এলোনা আমার বাথরুমের দরজা খুলে দিতে। এরকম হিটলার বাপ আমি আমার বাবার জন্মে দেখি নাই। আমার বাসর রাতের 12 টা বাজিয়ে এখন নিজে নিশ্চয়ই বউকে নিয়ে শান্তিতে ঘুমাচ্ছে। আমি এর প্রতিশোধ নিবো অবশ্যই নিব।
- রাত তিনটা আমি তখন কমোডের উপর বসে ঝিমচ্ছিলাম । হঠাৎ ঝরনার কন্ঠ শুনে চোখ মেলে তাকালাম। ঝর্না ফিসফিস করে বলল আসুন রুমে আসুন।
- আমি বেসিনে চোখ মুখ ধুয়ে রুমে ঢুকতেই দেখলাম ঝর্না একটা সুতি নীল শাড়ি পরেছে। মাথায় ঘুমটা দিয়েছ একদম বউ বউ লাগছে।
- তুমি এখানে এলে কিভাবে?
- আসলে আপনাকে ছাড়া আমার কিছুতেই ঘুম আসছিল না আপনি বাথরুমে আর আমি বিছানায় আরাম করে ঘুমাবো এটা কিভাবে হয় বলুন। আপনার কথা ভেবে ভেবে বিছানায় ছটফট করছিলাম তাই মা চুপি চুপি বাবার বালিশের নিচে থেকে চাবিটা নিয়ে আমাকে দিয়ে বলল যা ঝর্না ছুড়ালে আপনে রাজাকো। তাই আমিও ছুটে চলে আসলাম আপনার কাছে আমার রাজাকে এই বাথরুম নামের জেল থেকে মুক্তি করতে। অভ্র লাল চৌধুরী কে ছাড়া কি তার ঝর্না ঘুমাতে পারে বলেন?
- আমার হিটলার বাবা কিছু বলল না?
- না বাবা তো নাক ডেকে ঘুমাচ্ছেন।
- আর ভাইয়া ভাবি ?
- সবাই এখন ঘুমিয়ে পড়েছে শুধু আমি আর আপনি জাগা।
- ঝর্না রাত তো প্রায় শেষ হয়ে গেছে চলনা বাকী রাতটুকু ছাদে গিয়ে কাটিয়ে দি।
- যেতে পারি তবে একটা শর্ত আছে?
- এখানেও আবার শর্ত! তাকি শব্দ শুনি?
- যদি আপনি আমাকে কোলে করে নিয়ে যান?
- জো হুকুম মহারানী বলেই আমি ঝর্নাকে কোলে উঠিয়ে নিলাম।
ঝর্না শক্ত করে আমার গলা জড়িয়ে ধরলো।
- ছাদে গিয়ে ঝর্ণা বেশ অবাক হয়ে গেল। পুরো ছাদ বেশ সুন্দর করে লাইটিং করা হয়েছে। সে আমার দিকে তাকিয়ে বলল এই ছাঁদে তো দোলনা ছিল না?
- আমি ঝর্নাকে কল থেকে নামি দোলনায় বসে দিয়ে আমি ওর পাশে ঘেঁষে বসলাম। আলতো করে ঝর্নার হারটা আমার হাতের মধ্যে নিয়ে বললাম মনে আছে সেই প্রথম রাতের কথা। যেদিন আমি তোমার কোলে মাথা রেখে ছিলাম তুমি আমার চুলে বিলি কেটে দিয়েছিলেন?
- হ্যাঁ খুব মনে আছে কি করে ভুলি সেই অসম্ভব সুন্দর মুহূর্ত গুলোর কথা। আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্ত ছিল সেটা।
- সেদিনই আমার তোমাকে প্রথম ভালো লেগেছিল। সেদিন আমি ঠিক করেছিলাম এভাবেই একদিন দোলনায় বসে আমার বউয়ের কোলে মাথা রেখে জ্যোৎস্নাবিলাস করব। আর আমাদের ছাদে তো দোলনা ছিলনা। তাই গতকাল এটা সেট করা হয়েছে। কেন তোমার পছন্দ হয় নাই? মাঝে মাঝে সন্ধ্যারাতে এসব দুজন মিলে দোলনায় বসে চা কফি খেবো। মাঝে মাঝে জ্যোৎস্নাবিলাস করা হবে।
- ভালোই করেছেন আচ্ছা লাইট গুলো অফ করে দিন না চাঁদের আলোটা এই লাইট গুলোর কারণে ফিকে দেখাচ্ছে।
- আমি লাইট গুলো অফ করে দিয়ে ঝর্ণার পাশে গিয়ে বসলাম। ঝর্না আমার ডান বাহু চেপে ধরে কাধে মাথা রাখলো। এরপর আস্তে আস্তে বলল অবশেষে আমি পেলাম আপনাকে। অবশেষে আমি পেলাম আপনাকে শাসন করবার আদর করবার ভালোবাসবার বৈধ অধিকার। এখন আর কেউ আমাদের ভালোবাসায় বাধা দিতে আসবে না। আমার না এখন মিষ্টিকে ধন্যবাদ দিতে ইচ্ছা করছে। ও আপনাকে রিজেক্ট না করলে আমি হয়তো কখনোই আপনাকে পেতাম না। ঝর্না আরো একটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলল খুব ভালোবাসি আপনাকে। এতটা ভালো আমি কখনো কাউকে বাসিনাই।
কখনো কষ্ট দিয়েননা তাহলে মরে যাব।
- আমি ঝর্নাকে এক ধমক দিয়ে বললাম একদম বাজে কথা বলবানা। কথা দিচ্ছি তোমাকে কখনোই কষ্ট দিব না খুব ভালোবাসি তোমাকে। একটু পর আমি ঝর্ণার কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে পরলাম।
- জ্যোৎস্নার আলোয় ঝর্ণাকে ভিশন মায়াবী লাগছে। কিছু করছে আদরে আদরে ভরিয়ে দি তাকে।
ঝরনা আলতো করে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। একদম প্রথম দিনের মতই শুধু আজ আমি ওর কোমরটা শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রেখেছি।
- আমি ঝর্ণাকে বললাম ঝর্ণা একটা গান শোনাবে প্লিজ?
- এত রাতে গান?
- হ্যাঁ আমার খুব শুনতে ইচ্ছা করছে।
- ওকে ঠিক আছে শুনুন তাহলে ঝর্না গলা ছাড়ে গান বলতে শুরু করল
বন্ধু যখন বউ লইয়া আমার বাড়ির সামনে দিয়া।
রঙ্গ কইরা হাইটা যায় ফাইট্টা যায় ওরে বুকটা ফাইটা যায়।
- আমি ঝর্ণার পেটে একটা চিমটি মেরে বললাম এই পাজি মেয়ে এগুলো কি গান শোনাচ্ছো? পরিবেশটা দেখছো কত রোমান্টিক একটা রোমান্টিক গান শোনাও ।
- ঝর্না হি হি করে হেসে উঠলো। আমিতো রোমান্টিক গান পারিনা?
- ইস প্লিজ বলো না এত ভাও খাচ্ছ কেন?
-আচ্ছা ঠিক আছে শুনুন তাহলে। ঝর্না চোখ বন্ধ করে গান গাইতে শুরু করলো
এই মোম জোছনায় অঙ্গ ভিজিয়ে,
এসো না গল্প করি
এই মোম জোছনায় অঙ্গ ভিজিয়ে,
এসো না গল্প করি
দেখো ওই ঝিলিমিলি চাঁদ,
সারারাত আকাশে সলমা-জরি
এই মোম জোছনায় অঙ্গ ভিজিয়ে,
এসো না গল্প করি।
জাফরানি ওই আলতা ঠোঁটে,
মিষ্টি হাসির গোলাপ ফোটে
মনে হয় বাতাসের ঐ দিলরুবাতে,
সুর মিলিয়ে আলাপ ধরি।
দেখো ওই ঝিলিমিলি চাঁদ,
সারারাত আকাশে সলমা-জরি
এই মোম জোছনায় অঙ্গ ভিজিয়ে,
এসো না গল্প করি।
এই রূপসী রাত আর ঐ রূপালী চাঁদ
বলে জেগে থাকো
এ লগন আর কখনো ফিরে পাবে নাকো।
মখমলের ঐ সুজনি ঘাসে,
বসলে না হয় একটু পাশে
মনে হয় মহুয়ারই আতর মেখে,
তোমার কোলে ঘুমিয়ে পড়ি
দেখো ওই ঝিলিমিলি চাঁদ,
সারারাত আকাশে সলমা-জরি
এই মোম জোছনায় অঙ্গ ভিজিয়ে,
এসো না গল্প করি,ও.. এসো না গল্প করি।
- আমি ঝর্ণার পেট থেকে আঁচলটা সরিয়ে মুখ গুঁজে দিলাম ঝর্নার পেটে। ঝর্না কেঁপে উঠলো এরপর কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলল প্লিজ এখানে কিছু করবেন না রুমে চলুন।
- আমি আলতো করে চুমু দিয়ে ঝর্না কে কোলে তুলে নিলাম। ততক্ষণে ঝর্ণার নেশা ভরা চাহুনি আমাকে মাতাল করে দিয়েছে। ঝর্নাকে কোলে করে নিয়ে জাহিনের রুমের সামনে নামিয়ে
রুমে ঢুকতেই দেখলাম জাহিন পাছা অবউৎ করে শুয়ে আছে । আমি ওর পাছায় একটা লাথি দিলাম কিন্তু শালা মরার মত ঘুমাচ্ছে। আরো দুই টা লাথি দিলাম শালার কোন অনুভূতি নাই।
- অবশেষে আর কোন উপায়ান্তর না পেয়ে মোটা কে কোলে করে আমার রুমে দিয়ে এলাম।
- রুমে ফিরে এসে দরজাটা লাগিয়ে ঝর্না কে খাটে বসিয়ে বললাম তারপর..?
- ঝর্না লজ্জা মাখা কন্ঠে বলল তারপর কিছুই না?
- আমি অবাক হয়ে বললাম কিছুই না মানে আমি এত কষ্ট করে ওই মটু কে কোলে করে আমার রুমে রেখে আসলাম আর তুমি বলছো কিছুই না?
- ঝর্না লজ্জায় লাল-নীল হয়ে বলল পাঠকরা তো দেখছে পাঠকদের সামনে রোমান্স করবো কিভাবে?
- ও তাইতো আমিতো ভুলেই গিয়েছিলাম। পাঠক বন্ধুরা আপনারা চোখটা বন্ধ করুন আমরা একটু রোমান্স করি কেমন।
- সকালবেলা জাহিনের রুম থেকে আমাকে আর ঝর্নাকে বেরোতে দেখে সবার চোখ ছানাবড়া। সবার মুখটা তখন দেখার মত ছিল ‌।
- আমি ভাইয়ের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁত কেলিয়ে হাসতে হাসতে বললাম ভাইয়া আমি তো কাল রাতে ওয়াইফাই কানেক্ট করে ফেলেছি। তোমাদের এত প্ল্যান পরিকল্পনা কোন কাজেই দিল না।
- ভাইয়া বাবার দিকে তাকিয়ে বলল বাবা এটা কি হলো?
- বাবা রাগী কন্ঠে বলল সব দোষ তোর মা'র।
- এটা কোন কথা হলো বাবা আমি বাসর রাতে আমার বউকে পেলাম না 😥 আর অভ্রনীল ঠিকই.....
- বাবা ভাইয়াকে থামিয়ে দিয়ে গম্ভীর কণ্ঠে বললেন এই শুভ আমি শুনলাম তোর বাসর রাতে ও নাকি তোর বউ পড়ে গিয়েছিলো তোর কাছে?
- ভাইয়া মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে বললো কই কে বলেছে তোমাকে।
এসব মিথ্যা কথা
- বাবা দুঃখভারাক্রান্ত মন নিয়ে বলল, শুভর মা তুমি কাজটা মোটেও ঠিক করনি। আমি বাসর রাতে আমার বউকে কাছে পাইনি তাহলে আমার ছেলেরা কেন পাবে? তুমি কাজটা ঠিক করলা না। বুঝতে পেরেছি বাড়িতে নতুন বউ আনতে হবে তোমাকে দিয়ে আর চলবেনা।
- মা কোমরে শাড়ি গুজিয়ে ঝাড়ু হাতে নিয়ে বলল বুড়ো বয়সে কি ঝাড়ুপেটা খাওয়ার শখ হইছে?
- বাবা-মাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলল এই বউ তুমি রাগ করছো কেন আমি তো মজা করছি না।
- মা এক ঝটকায় বাবাকে সরিয়ে দিয়ে বলল অসভ্য লোক একটা ছেলে ছেলের বউ সামনে দাঁড়িয়ে আছে সেটার দিকে তার কোন নজর নেই। বেহায়া কোথাকার
- এক সপ্তাহ পর
এই আপনি কখনো বাথরুমে ঢুকেছেন এতক্ষণ লাগে আপনার ফ্রেস হতে? তাড়াতাড়ি বের হন মা নাস্তা করতে ডাকছে।
- তুমি দুই মিনিট দাড়াও আমি পাঁচ মিনিটের মধ্যে বের হচ্ছি।
- এই একদম ফাজলামি করবেন না তাড়াতাড়ি বেরন বলছি। বাথরুম কে বেড রুম বানিয়ে ফেলেছেন। আচ্ছা আপনার বাথরুমে এতক্ষণ বসে থাকতে ঘেন্না লাগে না।
হঠাৎ আমার কাসির শব্দ শুনে ঝর্ণা বললো । এই আপনি কি সিগারেট খাচ্ছেন নাকি?
- না না পাগল হয়েছ! আমার লক্ষী বউটা আমাকে সিগারেট খাইতে বারণ করেছে আমি কি আর সিগারেট মুখে নিতে পারি?
- তাহলে কি করছেন এত সময় নিচ্ছেন কেন?
- তুমি তো সিগারেট খাইতে বারণ করছে বউয়ের কথা তো আর ফেলতে পারিনা। যার কারণে বিড়ি খাচ্ছি তোমার কথা রাখা হলো আমার দুই নাম্বার (হাগা) ও কিলিয়ার হলো।
- আমি বাথরুম থেকে বের হতেই দেখলাম। বউ আমার মার মত করে কোমরে শাড়ি গুঁজে ইয়া বড় একটা বঁটি হাতে দাঁড়িয়ে আছে। তার চোখ দুটো থেকে যেন এখন আগুনের গোলা বেরোচ্ছে।
- আমি দিলাম এক দৌড় বউ আমার পেছনে পেছনে বটি নিয়ে দৌড়। আল্লাই জানে সামনের দিনগুলোতে আমার জন্য আরো কি অপেক্ষা করছে।
❤সমাপ্ত ❤









একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ad Code