Ad Code

Ticker

6/recent/ticker-posts

মিসকল (ভাবির বোন যখন বউ), লেখাঃ Shamil Yasar , পর্বঃ ০৩

 

#গল্পঃমিসকল
#পর্বঃ৩
#লেখাঃShamil_Yasar
বাবা এক পর্যায়ে শিং মাছ কিনলেন। আমি বললাম বাবা ভাবি কি শিং মাছ কাটতে পারবে? এই মাছটা না হয় বাদ দাও। যত মাছ কিনেছ ওগুলো তো কাটতে পারবে না। শিং মাছ কাটতে গিয়ে দেখা যাবে হাতে ফুটে দিয়েছে।
বাবা আমাকে এক ধমক দিয়ে বলল বেশি কথা বলবি না চুপচাপ আমি যা করছি শুধু দেখে যা। না হয় তোর ভাবীর সঙ্গে তোকেউ মাছ কাটতে বসিয়ে দেব।
আর উপায়ন্তর না পেয়ে আমি চুপচাপ বাবার পিছনে দাঁড়িয়ে রইলাম।
মাছের দোকানদার বাবাকে বললেন চাচা কাতল মাছটা কি কাইটা দিমু? এত বড় মাছ বাসায় কাটতে পারবেন না।
বাবা মুচকি হেসে বললেন ধুর মিয়া কে বলছে কাটতে পারব না। ছেলেকে বিয়ে করাইসি বুঝলা আজ ছেলের বউয়ের পরীক্ষা নিব । মাছ কাটার পরীক্ষা । দেখতে হবে না ছেলেকে কেমন মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দিলাম।
- দোকানদার দুপাটি দাঁত বের করে হেসে বললেন চাচা এখনকার মেয়েরা তো কিছুই পারে না। সারাদিন শুধু মোবাইল ফোন টেপাটেপি করে আর বান্দরের মত মুখ কইরা ছবি তোলে এ ছাড়া আর কিছু পারে না। দেখা যাবে আপনার ছেলের বউ মাছ কাটা বাদ দিয়ে। মাছের সাথে আপনার একটা ছবি তুলে ফেসবুকে ছেড়ে দিয়ে আপনাকে ভাইরাল করে দিচ্ছে।
-বাবা কিছুটা গম্ভীর কণ্ঠে বললেন কথা তুমি ভুল বল নি। এই মোবাইল ফোন টাই ছেলেমেয়েদের নষ্ট করল। সারাদিন কাজকর্ম নাই শুধু মোবাইল আর মোবাইল। কি আর করার যুগ জামানায় চেঞ্জ হয়ে গেছে বুঝলা? তবে আমার বৌমা মাশাআল্লাহ অনেক ভালো ও এসব করবে না।
- ফেরার পথে বাবাকে খুব গম্ভীর দেখালো। একসময় বাবা বলল নীল তোর ভাবি আবার সত্যি সত্যি আমাকে ভাইরাল করে দিবে না তো?
আমি বললাম না না বাবা ভাবি এসব কেন করতে যাবে।
বাবা বললেন আমার অবশ্য ভাইরাল হওয়া নিয়ে চিন্তা নাই। ভাইরাল হয়ে গেলে তো ভালই হয়। কিন্তু আমার চিন্তা হলো তোর মাকে নিয়ে।
- কেন মা আবার কি করলো?
- আরে বুঝিস না ধর আমি ভাইরাল হয়ে গেলাম এরপর মেয়েরা আমাকে যেখানেই দেখবে ছবি তুলতে আসবে। আমার সঙ্গে অন্য মেয়েদের ছবি উঠাতে দেখলে তোর মা কষ্ট পাবে না?
- আমি মনে মনে বললাম বুড়া বেটার শখ কত। পোলাপান ভাত পাচ্ছে না সেখানে বুড়ো এসে বলে আমাকে বিরিয়ানি দাও।
কোমরে শাড়ি গুঁজিয়ে রান্না ঘরে বসে ভাবি মাছ কাটছেন। দুই মিনিট পরপর ভাইয়া রান্না ঘরে ভুলকি দিচ্ছে। ভাবিকে হয়তো কিছু বলতে চাচ্ছে কিন্তু বাবা থাকায় রান্না ঘরে ঢোকার সাহস পাচ্ছে না।
এতগুলো মাছ দেখে ভাবির কি অবস্থা হয়েছিল সেটা তো আপনাদের বলাই হয়নি। এতগুলো মাছ দেখার পর ভাবির অবস্থা এমন হয়েছিল যেন তিনি ভয়ঙ্কর কিছু দেখে ফেলেছেন। ভাবি করুন চোখে কিছুক্ষণ ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে ছিল। আমি 100% শিউর ভাবি মনে মনে বাবার চৌদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধার করছিলো।
ভাইয়া বাইরে থেকে আমাকে ডাকল। আমি বাইরে যেতে ভাই আমাকে বলল বাবাকে একটু বলতো ওকে দিয়ে যেন মাছ না কাটায়। ওকি কাজের মেয়ে নাকি যে ওকে মাছ কাটতে হবে? আমি বললাম আমি বলতে পারবোনা তুমি গিয়ে বাবার সঙ্গে কথা বল। আর মাছ কি শুধু কাজের মেয়েরাই কাটে? মা ও তো মাঝে মাঝে মাছ কাটে তাহলে মা কি কাজের মেয়ে? ভাইয়ার কথা না বাড়ি চলে গেল আমিও রুমে গেলাম আমার ফোন আনতে। ফোন নিয়ে রুম থেকে বের হতে শুনলাম ভাবির ছোট বোন মিষ্টি বলছে।
এই বুড়াকে তো ভালো মনে করেছিলাম। ছেলেটা তো মিচকা শয়তান আর এখন দেখি এই বুড়া বেটা হাইলেবেলের শয়তান। জানো কাল রাতে বাসর ঘর থেকে আপুকে নিয়ে এসে তার বউয়ের সেবা করতে লাগিয়ে দিয়েছিল। আজ আবার সকাল সকাল অনেকগুলো মাছ আপুকে কাটতে দিয়েছে। এমন হিটলার শশুর যেন আমার কপালে না জোটে। হ্যাঁ এই বুড়ার গিরায় গিরায় শুধু শয়তানি বুদ্ধি ছোট ছেলেটাও ওই রকমই হয়েছে। এক নাম্বারের লুচ্চা। ফোনের ওপাশের জন কি বলল আমি শুনতে পারলাম না কিন্তু সে বলল সুন্দর হয়েছে তো কি হয়েছে লুচ্চামি করতে হবে। মেয়ে দেখলেই শুধু ফ্লাটিং করে আস্ত তো একটা ফাজিল ছেলে। ওরে দেখলেই আমার ইচ্ছা করে থাপরাইয়া গাল ফাটিয়ে দিতে।
আমি আর থাকতে পারলাম না দরজা ঠেলে রুমে ঢুকতে মেয়েটা আমাকে দেখে ভুত দেখার মত ভয় পেয়ে গেল।
আমি ওর হাত থেকে মোবাইলটা নিয়ে ওকে বাথরুমের মধ্যে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলাম। মেয়ের সাহস কত বড় আমার বাবার নামে উল্টাপাল্টা কথা বলে। এখন বুঝ মজা আমায় থাপ্পড়াবি ? এখন থাক বাথরুমে ফাজিল মেয়ে।
- ভাবি ছোট মাছ কাটতেছে । মাছ কাটতেছে বললে ভুল হবে ভাবি আসলে মাছ কাটার চেষ্টা করছেন। দেখেই বোঝা যাচ্ছে ভুলেও কোনদিন ভাবি মাছ ছুঁয়েও দেখেনি।
আমাদের বাসার কাজের মেয়ে ফুলি। সে দু পাটির দাত বের করে খিলখিল করে হাসছে আর বলছে, খালুজান নতুন ভাবি তো অকর্মার ঢেঁকি। ফুলি যখন আমাদের বাসার নতুন এসেছিল এই ডায়লগ টা মা দিত। মা সারাদিন ওকে বলতো ফুলিরে তুই একটা অকর্মার ঢেঁকি তোকে দিয়ে কোন কাজ হবে না। তোকে আর কাজে রাখবো না। আর তখন ফুলি ভ্যা করে কান্না করে দিত।
তারপর বলতো খালাজান আমি এতিম মেয়ে আমারে কামত থেকে বার করে দিয়েন না। আপনার দুইটা পায়ে ধরি খালাজান বলেই ফ্লোরে শুয়ে পড়ে শক্ত করে মা পা জড়িয়ে ধরত। কিন্তু এখন আর এসব কিছুই করেনা । কারণ ফুলি জানে মা ওকে যাই বলুক না কেন ওকে কখনো বাসা থেকে বের করে দিবেনা। মা ওকে খুব ভালোবাসে ফুলি ও মাকে খুব ভালবাসে।
এমন করে কোনদিন মাছ কাটন যায় ? খালুজান নতুন ভাবী মাছ কাটতে পারব না শেষে দেখা যাইবো মাছ কাটতে গিয়া হাত কাইটা ফেলছে, আমি কাইটা দি।
- বাবা এক ধমক দিয়ে বলল কেন তোর বসে থাকতে ভালো লাগছে না? দ্বারা তোকে একটা কাজ দিচ্ছি। যা দশবার ছাদে উঠবি আবার ছাদ থেকে নিচে নামবি। সঙ্গে সঙ্গে ফুলি সিঁড়ির দিকে গেল।
ফুলির একটা বিশেষ গুণ তাকে যে
আদেশ করা হবে সঙ্গে সঙ্গে সে , সেই আদেশ পালন করবে।
একবার কি হয়েছে আমি কোন কারণে রেগে গিয়ে ফুলিকে বললাম , যা ছাদে গিয়ে সূর্যের দিকে তাকিয়ে থাকবি। সন্ধ্যার পরে ফুলি আমার রুমে এসে বলতেছে ভাইজান সূর্য তো ডুইবা গেছে এখন কোন দিকে চাইয়া থাকমু? আমি তখন হাসবো না কাঁদবো ঠিক বুঝতে পারছিলাম না।
বাবা ভাবিকে ছোট মাছ রেখে বড় কাতলা মাছ কাটতে বললেন। ভাবি বড় কাতলা মাছ উঠাতেই পারছেনা কাটবে কি। ঠিক তখনই রান্নাঘরে মা এসে বলল। শুভর আব্বু তুমি সকাল-সকাল এইসব কি শুরু করেছ? নতুন বউকে এত বড় মাছ কেটে দিয়েছ কেন? এত বড় মাছটা আমি কাটতে পারব না, বাচ্চা একটা মেয়ে ও কিভাবে কাটবে? বৌমা তুমি রুমে যাও এসব মাছ তোমাকে কাটতে হবে না। আমি কেটে দিচ্ছি
- বাবা সঙ্গে সঙ্গে মার কমর জরিয়ে ধরে বল মাই ডিয়ার বউ, তুমি তোমার কাজ করো গিয়ে এখানে নাক গলাতে এসো না। আর তোমার মাছ কাটার তো কোন প্রশ্নই আসে না তবে তুমি চাইলে আমাকে একটা চুমু দিতে পারো।
মা বাবার বুকে একটা চাপড় মেরে বলল অসভ্য লোক একটা। এরপর হনহন করে বেরিয়ে গেল রান্নাঘর থেকে। বাবা সেদিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলেন।
ভাবি কাতলা মাছ হাতে নিয়ে ভাবতেছে কিভাবে এটা কাটবে। বাবা বসে বসে বেশ মজা নিচ্ছে। বাবার সঙ্গে আমিও বসে বসে মজা নিচ্ছি।
ভাইয়া এবার সাহস করে রান্না ঘরে ঢুকল। একবার ভাবীর দিকে তাকিয়ে বাবার দিকে মুখ ফিরিয়ে বলল। বাবা এত বড় মাছ ও কিভাবে কাটবে? ওতো জীবনে মাছ ছুঁয়ে দেখেনি। প্লিজ তুমি এসব বন্ধ করো।
- বাবা ভাইয়াকে এক ধমক দিয়ে বলল কেন বউয়ের জন্য দরদ উথলে উথলে পড়ছে। বউয়ের কষ্ট সহ হচ্ছে না? আর একবার যদি তোকে রান্নাঘরে ভুলকি দিতে দেখেছি তাহলে বৌমার সঙ্গে তোকেউ মাছ কাটতে বসিয়ে দেবো এখন যা ভাগ এখান থেকে। ভাইয়া করুন চোখে কিছুক্ষণ বাবার দিকে তাকিয়ে থাকলো। এরপর দ্রুত বেরিয়ে গেল।
ভাবীর দিকে তাকিয়ে দেখলাম ভাবি নিঃশব্দে কাঁদছে।
বাবা ভাবীর দিকে তাকিয়ে বলল বৌমা ওঠো হইছে অনেক মাছ কেটেছ এখন যাও গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাও।
কিন্তু তখনই ভাবী হাত কেটে ফেলল। বেশ অনেকখানি কেটেছে। বাবা নিজ হাতে ব্যান্ডেজ করে দিল।
ব্রেকফাস্ট টেবিলে সবাই খাচ্ছে কিন্তু ভাবীর হাত কেটে যাওয়া তিনি অন্যমনস্ক হয়ে চামচ দিয়ে শুধু খাবার নাড়াচাড়া করছে। কিন্তু সেদিকে ভাইয়ার কোন নজর নেই সে গপাগপ শুধু ঠুষে যাচ্ছে।
বাবা ভাবিকে তার পাশের চেয়ারে বসতে বলল। এরপর নিজেই ভাত মেখে ভাবিকে খাওয়াতে লাগলো। আমরা সবাই অবাক হয়ে দেখছি শুধু। এটা কি করে সম্ভব? বাবা আমাকে বা ভাইয়াকে কখনোই হাত দিয়ে তুলে খাওয়ায় নাই। সেখানে আজ ভাবিকে খাওয়াচ্ছেন আমরা কি স্বপ্ন দেখছি? অবিশ্বাস্য ব্যাপার
ভাবিকে দেখলাম কাঁদছে। টপটপ করে চোখ বেয়ে পানি পড়ছে। আচ্ছা মেয়েদের কী চোখে ট্যাপ সেট করা থাকে নাকি? তা না হলে যেকোনো মুহূর্তে তাদের চোখে এতো পানি আসে কিভাবে?
বাবা বাম হাত দিয়ে ভাবির মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল পাগলি মেয়ে কাঁদছো কেন? কান্না বন্ধ করো তা না হলে কিন্তু আবারও মাছ কাটতে লাগিয়ে দিব। তখন কিন্তু আমাকে হিটলার শ্বশুর বলতে পারবা না।
ভাবি চোখের পানি মুছে একটু হাসার চেষ্টা করে বলল আমার বাবা কোনদিন এভাবে এত আদর করে আমাকে তুলে খাওয়ায়নি।
- তুমি তো আমার মেয়ে যখন ইচ্ছা হবে আমাকে বলবে আমি নিজ হাতে তোমাকে খাইয়ে দেবো।
-বাবা আপনার সঙ্গে একটা সেলফি তুলি?
সেলফি তুলবে ভালো কথা আবার আমাকে ভাইরাল করে দিও না যেন বলে বাবা হেসে উঠলে।
আমরা সবাই হেসে উঠলাম। ভাবী বলল ভয় নেই বাবা ভাইরাল করবো না। আর ভাইরাল করলে বা ক্ষতি কি! আমার শশুর মশাই যে এত কেয়ারিং পারসন এটা তো সবাইকে জানাতে হবে তাইনা?
বাবা চোখে দেখলাম পানি চিকচিক করছে।
জানো বৌমা আমি তোমাকে যেদিন প্রথম দেখেছিলাম । আমার মনে হয়েছিল আমি আমার বড় মেয়েটা কে আবার ফিরে পেয়েছি। আমি সেই দিনই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলাম যে করেই হোক আমি তোমাকে আমার বাড়িতে আমার মেয়ে বানিয়ে আনবো। তুমি তো জানো মেয়েরা সব সময় বাবা ভক্ত হয়। আমার মেয়েটা ছিল আমার ভক্ত। আমি যখন ছুটিতে আসতাম মেয়েটা যে কি খুশি হত। বাবা বাবা বলে সারা বাড়ি মাথায় করে রাখত। আবার চলে যাওয়ার সময় মেয়েটা গাল ফুলিয়ে বসে থাকতো। কান্না করতে করতে বলতো বাবা তোমার সঙ্গে আড়ি আর কখনোই তোমার সঙ্গে কথা বলবো না। মেয়েটা সত্যিই আর কখনো আমার সঙ্গে কথা বলো না। আমার কলিজাটা অভিমান করে চলে গেলো আমাকে ছেড়ে। পুকুরের পানিতে ডুবে মারা গেল আমার কলিজার টুকরা। যানো বৌমা আমি শেষ দেখাও দেখতে পারিনি আমার মেয়েটাকে। ছুটিতে যখন এলাম বাসায় আমার মেয়েটাকে কোথাও খুঁজে পেলাম না। বাড়িসুদ্ধ খুজলাম কিন্তু কোথাও নেই আমার মেয়ে। আমার বাবা আমাকে শক্ত করে ধরে নিয়ে গেলেন একটা কবরের সামনে। এরপর বললেন আমার মেয়ে নাকি কবরে ঘুমিয়ে আছে।
বাবা কাঁদছিলেন । মা শক্ত হাতে মুখ চেপে চেয়ার ছেড়ে উঠে চলে গেলেন। ভাবি বাবাকে জড়িয়ে ধরতে বাবা বাচ্চাদের মত হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো। আমি এর আগে কখনোই বাবাকে কাঁদতে দেখিনি।
টেবিল জুড়ে সবার চোখে পানি ।
আমি মিষ্টির দিকে তাকাতেই দেখলাম সে হাত দিয়ে শক্ত করে তার মুখ চেপে ধরে আছে। আর গাল বেয়ে টপ টপ করে পানি গড়িয়ে পড়ছে। আমার সাথে চোখাচোখি হতেই সেও চেয়ার ছেড়ে চলে গেল।
ভাবি ফোঁপাতে ফোঁপাতে বললেন বাবা আমিও তো আপনার মেয়ে আপনার একটা মেয়েকে আল্লাহ উঠিয়ে নিয়েছে তো কি হয়েছে আপনার আরেকটা মেয়ে তো আছে আপনি প্লিজ কাঁদবেন না।
বাবা সবার আড়ালে ভাবিকে একটা হিরের নেকলেস দিল।
ভাবি নেকলেসটা নিয়ে অবাক চোখে বাবার দিকে তাকিয়ে বোকার মত বলল বাবা এটা কার জন্য?
- কার জন্য আবার অবশ্যই তোমার জন্য। এটা তোমার মাছ কাটার সালামি বলে বাবা হাসল।
- কিন্তু বাবা আমি তো মাছ কাটতেই পারিনি।
- তাতে কি তুমি যে সাহস করে বোটি নিয়ে মাছ কাটতে বসে ছিলে এটাই আমার জন্য অনেক। আর শোনো গতকালকে তোমাদের বাসরের বারোটা বাজানোর কারণ ছিল। আমার ছেলেটাকে একটু শিক্ষা দিলাম ও আমার চোখের আড়ালে আমার বন্ধুর মেয়ের সঙ্গে ইটিশ পিটিশ করেছে তাও আবার তিন বছর ধরে সেটা শাস্তি দিলাম। আজ আবার তোমাদের বাসর ঘর সাজানো হবে আজ কিন্তু কেউ তোমাদের বাসরঘরে ডিস্টার্ব করবে না বলেই বাবা হাসলেন।
- ভাবী বেশ লজ্জা পেল আর ঠিক তখনই আমার ফোনটা বেজে উঠলো। 5 সেকেন্ড না হতে আবার রিংটোন কেটে গেল। এই ফকিন্নি টা আবার আমাকে মিসকল দিয়েছে।
বাবা আমাকে ডাক দেওয়ার আগে আমি সেখান থেকে কেটে পড়লাম।
আমি ফকিন্নি কে কল ব্যাক করলাম কিন্তু সে ফোন রিসিভ করেনা কত বড় শয়তান।
এদিকে
মা মিষ্টিকে বারবার ফোন কাটতে দেখে বলল কে এতবার ফোন দিচ্ছে মা? ফোন ধরছ না কেন?
মিষ্টি বেচারী দের মত মুখ করে বলল জানেন না আন্টি এক বেয়াদব ছেলে শুধু শুধু আমাকে ফোন দিয়ে বিরক্ত করছে। বারবার আমাকে ফোন দিয়ে কি সব বাজে বাজে কথা বলে। একটা নাম্বার ব্ল্যাকলিস্ট করে দিলে অন্য আরেকটা নাম্বার দিয়ে ফোন করে আমাকে ডিস্টার্ব করছে।
- মা বলল আমাকে দাও তো ফোনটা। ওর বেয়াদবি আমি ছোটাচ্ছি এখনই।
- না না আন্টি থাক ছেলেটা খুব খারাপ।
- মা মিষ্টির হাত থেকে ফোন নিয়ে বলল আরে কত খারাপ ছেলেকে সাইজ করলাম।
অনেকক্ষণ পর ফোন রিসিভ হলো। হ্যালো জানু বলো? আর কিছু বলার আগে ওপাশ থেকে গালিগালাজ শুরু হয়ে গেল।
- হারামজাদা বাড়িতে তোর মা বোন নেই ? মেয়ে দেখলেই শুধু লুচ্চামি করতে ইচ্ছা করে? বেয়াদব ছেলে, কে তোর জানু রে? মেয়েদের সঙ্গে কিভাবে কথা বলতে হয় সেটাও তো জানিস না। মা বাবা তোকে শিক্ষা দিতে পারেনি। হারামজাদা আর একবার যদি ফোন দিয়েছিস আমার মেয়েকে তোকে একদম পুলিশে দিব।
আমি সঙ্গে সঙ্গে ফোন কেটে দিলাম। আমারা চিনতে অসুবিধে হলো না ফোন রিসিভ করেছিল আমার মা। আমার মাকে দিয়ে আমাকে বকা খাওয়ানো দ্বারা ছেমরি তোর আগে পায়। তোকে যদি করোতোয়ার ড্রেনের থেকে চুবিয়ে না আনছি তাহলে আমার নাম অভ্রনীল চৌধুরী না।
- মা ফোন রেখে মিষ্টির দিকে তাকিয়ে বলল দেখলে এসব টোকাই ছেলেপেলেদের কিভাবেই শায়েস্তা করতে হয়। ফোন কেটে দিয়েছে আর জীবনে তোমাকে ফোন দিবে না।
মিষ্টি মুচকি হাসল এরপর মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে মুখে হাত দিয়ে হাসি চেপে মনে মনে বলল আন্টি আপনাকে যদি বলতে পারতাম আপনি আপনার ছেলেকে বকছিলেন এতো ক্ষন। তখন আপনার মুখের অবস্থা কেমন হতো এটা দেখতে চাওয়া আমার মত । তবে মিস্টার লুচ্চা নিজের মায়ের হাতে বকা খেয়ে নিশ্চয়ই লুচ্চামি কমিয়ে দিবে।
আমি ছাদে বসে বসে সিগারেট টানছিলাম। হঠাৎ করে পেছন থেকে মিষ্টি এসে বলল
আল্লাহ ছিঃ ছিঃ আপনি সিগারেট খান
আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম না আমি আমির খান
মিষ্টি ভেংচি কেটে বলল দাঁড়ান আমি এক্ষুনি আংকেল কে বলে দিচ্ছি....
চলবে...
বিশেষ দ্রষ্টব্য ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন। আমি প্রচুর অলস এজন্য প্রতিদিন গল্প লিখতে পারিনা । আজ থেকে প্রতিদিন দেওয়ার চেষ্টা করব।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ad Code