Ad Code

Ticker

6/recent/ticker-posts

গল্পঃ ভালোবাসি ওগো মায়াবী , পর্ব : ১৪, লেখক বর্ষা রায়

 

" ভালো হবে না কিন্তু।"
--কি করবি।"
-- কিছুই না।
--তাহলে চুপ করে বসে থাক।"
--তুমি এমন কেন?
--আমি এমনে।"
--আফরিন তপ্ত শ্বাস ফেলে বসে থাকে। পর পর দু'টো ক্লাস করে রুম থেকে বের হয়।"
--পিছন থেকে কারো ডাক শুনে ডেইজি থেমে যায়।"
আফরিন ডেইজির সামনে এসে দাঁড়ায়।"
--কি প্রবলেম?"
--কিছু না। আসলে আমার কোনো ফ্রেন্ড নেই তো আমি তোমার ফ্রেন্ড হতে পারি ।"
--ঠিক আছে।"
--কোথাও যাচ্ছিলে?
--কেন্টিনে যাচ্ছি।"
চলো চলো এক সাথে যাই।"
--কেন্টিনের দরজায় দাঁড়িয়ে দেখছে ফাহিম স্যারের সাথে কথা বলছে।" তাই আর কেন্টিনের ভিতর না গিয়ে চলে যেতে ধরে। আফরিন বলে, একি তুমি চলে যাচ্ছো কেন?
--যাবো না আমি।"
--আরে তুমি পাগল নাকি, কখন কি যে করো বুঝা যায় না।"
--বুঝতে হবে না।"আচ্ছা তুমি থাকো কাল দেখা হবে, আমি চলে যাচ্ছি।"
--ঠিক আছে। বাট তোমার ফোন নম্বর টা তো দেও।"
--ডেইজি ফোন নম্বর টা দিয়ে চলে যায়।"
--রাস্তা দিয়ে একাই হাঁটছে। কিছুই ভালো লাগছে না। তাই ফুচকা খাবে বলে ঠিক করেছে। ফুচকার দোকানে গিয়ে বলে, ভাইয়া দু প্লেট ফুচকা দিন, আর বেশি করে ঝাল দিবেন।"
--ফুচকা খেতে খেতে ঠোঁট লাল করে ফেলেছে। চোখ দুটো ঝলঝল করছে। বোতলের পানি সব শেষ করে ফেলেছে।"
--ফুচকাওয়ালাকে টাকা দিয়ে যেতে ধরে। ফাহিম এাে বাইক থামিয়ে দেয়। ডেইজি না চেনার ভান করে চলে যায়।"
--এই ডেইজি সরি। বাইকে উঠো।"
--ডেইজি ঝাঁজালো কন্ঠে বলে দেয়, আমি আপনাকে চিনি না।"
--ডেইজি প্লিজ।"বাইক থামিয়ে ডেইজির পিছন পিছন যায়। ডেইজি তো যাচ্ছে আপন মনে। ফাহিম এসে হাতটা টেনে ধরে বলে, ডেইজি।"
--ডেইজি প্রত্যুত্তরে কিছুই বলছে না। মাথা নত করে আছে।" কি হলো কথা বলছো না কেনো।"ফাহিম বলে, আমি তোমাকে বলি নি তার জন্য সরি। আর আমি জানি তুমি মেয়ে গুলোর জন্য জেলাস ফিল করছো।
--আমি কেনো জেলাস ফিল করবো, কে হই আমি আপনার?
--কেউ না তুমি আমার, এখন চলো আমার সাথে।"
--যাবো না আমি।"
--তুমি কি চাও পাবলিক প্লেসে তোমাকে আমি কোলে তুলে নেই।"
"ফাহিমের কথা কর্ণপাত হতেই ডেইজি চুপচাপ বাইকের কাছে যায়।"
--ফাহিম বাসার সামনে বাইক দাঁড় করায়।" ডেইজি কিছু বলছে না চুপচাপ আছে।
--কি হলো ভিতরে আসতে বলবে না।"
--আসেন।"
--অনামিকা টিভি দেখছিলো পরির সাথে। ডেইজির সাথে ফাহিমকে দেখে বলে, বাবা তুমি কেমন আছো?
--আলহামদুলিল্লাহ আন্টি ভালো আছি। আর আপনি কেমন আছেন?
--আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি।"
--নীধি রুম থেকে ফাহিমের সাথে কথা বলে কিচেনে চলে যায়।"
--অনামিকা ফাহিমকে জিজ্ঞেস করে, আজকে হুট করেই এলে। বাসা তো আগুন জোয়ান কেউ নেই।"
--হ্যাঁ, বলে আসা উচিত ছিলো। আর আমি সময় পাইনি। আপনাদের একটা কথা বলার জন্যই আসা।
--জি বাবা বলো।"
--বাবা চাচ্ছে এই সপ্তাহে দু'ভাই বোনের বিয়ে দিতে। তিনি বাইরে চলে যাবেন। তো বাবা আসতে চেয়েছিলো সময় পাচ্ছে না।"
--বাবা তুমি বসো জোয়ান আগুন আসুক কথা বলো। তুমি ডেইজির রুমে যাও। ওদের কে কল করছি আমি।
--না আন্টি আমার একটু কাজ আছে তো আমার সময় নেই।" আপনি ওদেরকে বললে বুঝবে।"
--তুমি যখন এতো করে বলছো ঠিক আছে। ওরা আসলে বলবো।" নীধি কফি এনে দেয় ফাহিম কে।"
"ফাহিম কফি খেয়ে চলে যায়।"
--নীধি ডেইজির রুমে গিয়ে বলে, এই যে ননদী বিয়ে কথা কিন্তু বলে গেলো।"
--কার বিয়ে কাকে বলে গেলো?
--আরে ননদী তোমার বিয়ে। আগামি এই সপ্তাহে।"
--আমার বিয়ে আমি জানি না। হুট করে বললেই হলো নাকি।"
--হাইপার হওয়ার কি আছে? বিয়ে করলে স্বামীর ভালোবাসা একটু বেশি করে পাবে।" আর বিয়া টা হোক, এমন টা তো না যে তুমি চাও না।
--ডেইজি কিছু না বলে বেডের উপর বসে আছে।" "আচ্ছা রেগে আছো প্রচুর তাই না।
--হুম খুব।"
--পাগলি একটা। ভালোবাসার মানুষের উপর রাগ করে বেশিক্ষণ থাকতে পারবে না।"যতই সে ভুল করুক না কেনো বা অন্য কোনো বিষয় নিয়ে হোক, তার সাথে কতা বলার জন্য বুকটা ছুটফট করে। মস্তিষ্ক জুড়ে শুধু ওই মানুষটাই ঘোরে। তাই কথা বলে নেও। রাগ অভিমান তো আসবে যাবে আবার সেটা আরো সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তুলবে। কথা বলে নেও, দেখবে মানুষটার প্রতি তোমার দ্বিগুন ভালোবাসা বেড়ে গেছে৷"
--তুমি আমার মিষ্টি ভাবি। এতো সুন্দর করে কথা বলো তুমি, তাই তো ভাইয়া তোমাকে একটা মুহুর্তের জন্য চোখে আড়াল করে না। তোমাকে আগলে রাখে।"
--হয়েছে, এখন সব কিছু মিটিয়ে মেও বুঝলে, শান্তি পাবে।"
--ঠিক আছে।"
--রাতে বসে সবাই মিলে খেতে বসেছে। তখনি অনামিকা আগুন আর জোয়ানকে বলে। জোয়ান সব কিছু তেই রাজি। সে অনেক খুশি, কিন্তু আগুন এখন বিয়ে করতে চাচ্ছে না। সবাই বোঝালো কিন্তু বুঝলোনা। খাওয়া শেষ করে রুমে যায়।"
--রাইসার সাথেও কথা বলেছে বিয়ের ব্যাপার নিয়ে। রাইসা বিয়ে করবে,আগুন না করার কারণে রাইসা রাগ করে ফোন অফ করে রেখেছে। সে আর কথাই বলবে না।"
--আগুন কি করবে বুঝতেছে না।"
--অনেক ভাবলো, বিয়ে করতেই হবে।"
--তাই ফাহিমকে বলে, ডেইজিকে কল দিতে বলে।
--ফাহিমের কথা শুনে রাইসা সেই খুশি। আগুনকে কল দিয়ে কথা বলে নেয়।"
__________
দুই পরিবারে বিয়ের কাজ চলছে। আর মাত্র দুই দিন।
বিয়ের জন্য মার্কেট করতে গিয়েছে। পুরো একটা দিন পার হয়ে গেছে। রাতে রেস্ট নিচ্ছে যে যার রুমে। পরি তার বাবার সাথে শুয়ে রাইসার সাথে ভিডিও কলে কথা বলছে। রাইসা পরির সাথে কথা বলতে ভালো লাগে।"রাইসাকে পরি বলে,
--মিষ্টি মা তুমি আমাকে একটা ভাই এনে দিবে। আমার বান্ধবীর ছোট ভাই আছে অনেক কিউট। আমিও ওই রকম একটা ভাই নিবো। দিবে না আমাকে একটা ভাই এনে।"
--ভাই চাইলে তো পাওয়া যাবে না। সময় লাগবে, তুমি তো সময় আমাকে দিবে, তাহলে আমি তোমাকে ভাই এনে দিবো।"
--কি মজা। বাবা মিষ্টি মা আমাকে ভাই এনে দিবে।"
--পরি তুমি ঘুমাবে না মা, তোমাকে তো ঘুমাতে হবে।" মা কে শুভ রাত্রি বলো।"
--শুভ রাত্রি।"
--বাবা আমি চাচুর রুমে যাবো।" না পরি তুমি এখন
ঘুমাবো।
না বাবা আমি যাবো।" পরি বেড থেকে নেমে দরজা খুলে চলে যায়।"
--জোয়ান আর নীধি ঘুমানোর জন্য বেডে চরবে সেই সময় দরজা ধাক্কা দেওয়ার শব্দ হয়।" নীধি মুচকি হেসে দরজা খুলতে চলে যায়। তার আর বুঝতে বাকি নেই পরি এসেছে।
--দরজা খুলে পরিকে কোলে তুলে নেয়।" জোয়ান বলে, কি ব্যাপার পরি আমাদের সাথে ঘুমাবে।
--না, বাবার সাথে ঘুমাবো। তোমাদেরকে দেখতে আসলাম। তাহলে আমি এখন যাই, শুভ রাত্রি।" আবার দৌড় দিয়ে চলে যায়।"
--নীধি গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।"
_________
হলুদের অনুষ্ঠান ছাদে তৈরি করা হয়েছে। অনেক আত্নীয় স্বজন এসেছে। ছাদটা অনেক সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। রাতের অন্ধকারে চারপাশটা অনেক সুন্দর লাগছে। পরি অনেক সুন্দর করে সেজেছে। সারা বাড়ি নিচে নিচে বের হচ্ছে।
--জোয়ান ফ্রেশ হওয়ার জন্য রুমে যায়। রুমে গিয়ে দেখে আলমারির সব কাপড় বেডে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। আর নীধি কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।"
--একি নীধি সব কাপড় এভাবে রেখেছো কেনো?"
--নীধি মুখটা ভার করে বলে, আমি বুঝতে পাচ্ছি না আমি কি পড়বো। আর আমাকে কোনটা মানাবে বলেন তো।"
--তুমি যেটাই পড়ো না কেনো তোমাকে অনেক সুন্দর লাগবে। তাই এতো কিছু না ভেবে পড়ে নেও একটা।"
--তাহলে আমাকে একটা পছন্দ করে দেন।"
--জোয়ান হলুদ আর লাল রঙের একটা শাড়ি পছন্দ করে দেয়। হলুদের অনুষ্ঠানে এটাই ভালো হবে।"
--নীধি শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যেতে ধরলে বলে, একি চলে যাচ্ছো কেনো?"
--শাড়ি পড়বো তো।"
--কাপড় গুলো কি এভাবে থাকবে।"
--আপনি আছেন কি জন্য বউয়ের তো এতটুকু কাজ করতেই পারেন।" নীধি চলে যায়, জোয়ান তপ্ত শ্বাস ফেলে কাজে লেগে পড়ে।"
--কিছুক্ষণ পর নীধি ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে আসে।"
জোয়ান অনেক সুন্দর করে সব কিছু গুছিয়ে রেখেছে।"
--জোয়ান রুমে নেই। নিশ্চয়ই আবার কাজ করতে গেছে।" নীধি রেডি হয়ে ডেইজির রুমে চলে আসে অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে। ছাঁদে নিয়ে যাওয়া হয় দু ভাই- বোনকে। আর হলুদের কাজ সম্পূর্ণ করা হয়।"
--নীধি চুপ করে জোয়ানের গালে হলুদ মেখে দিয়েছে।"
পরি দেখে হেসে দেয়।" চাচু তোমার মুখে হলুদ।"
--জোয়ান নিজের গালে হলুদ নিয়ে নীধিকে লাগিয়ে দেয়।"
--ফ্রেশ হওয়ার জন্য রুমে যায়। জোয়ান নীধিকে টেনে নিজের ওষ্ঠদ্বয় দিয়ে নীধির ললাটে ছুঁইয়ে দেয়।
--এদিকে রাইসা আর ফাহিমের হলুদের অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে৷ রুমে এসেই ভিডিও কল দেওয়া শেষ। পরির রাইসাকে দেখে বলছে মিষ্টি মা তোমাকে খুব সুন্দর দেখাচ্ছে।"
--পাশে নীধিও ছিলো, নীধি বলছে, বরের মুখে শুনতে ইচ্ছে করছে কেমন লাগছে তাই না।'
-- রাইসা লজ্জা পেয়ে যায়। "তেমন কিছুই না।"
--বুঝতে পেরেছি আমি আমাকে মিথ্যা বলো না বুঝলে। দাঁড়াও আমি ডেকে দিচ্ছি।" আগুনকে ফোনটা দিয়ে দেয়, আগুন সোজা রুমে চলে যায়।" রাইসা আগ্রহী কন্ঠে বলে, কেমন লাগছে আমায়।
"মায়াবীর মতো লাগছে।"
#চলবে
(ভুল ত্রুটি থাকলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন আর ভুল গুলো ধরিয়ে দিবেন)


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ad Code